সরকারি শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয় খাজুরা বাঘারপাড়া, যশোর
অধ্যক্ষের বাণী
মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশের সূর্্য সন্তান স্বাধীনতার ঊষালগ্নে এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায় তারপর আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর একান্ত সহচর, নির্ভিক সাংবাদিক শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর নির্দেশনায় তৎকালীন যশোর জেলার কৃতি সন্তান বর্তমান মাগুরা জেলার অন্তর্গত শ্বর্শুনা গ্রামের শহীদ বুদ্ধিজীবী প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের নামে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত যশোর–মাগুরা তথা ঢাকা–কোলকাতা মহাসড়কের পাশে এক চমৎকার দৃষ্টিনন্দন ভৌগোলিক অবস্থানে কলেজটির অবস্থান। এর অদূরেই বয়ে চলা চিত্রা নদী তার পাশ ঘেঁসে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী খাজুরা বাজার। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার কারনে কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পদচারনা ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া কলেজটির ঈর্ষণীয় সাফল্য এবং নকলমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই কলেজের খ্যাতি প্রথম থেকেই স্বীকৃত। যশোর শহরের উত্তরে অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এলাকায় মাইলফলক স্বরূপ। বর্তমানে কলেজটিতে সাত (০৭) টি বিষয়ে অনার্স সহ ডিগ্রী (পাস) কোর্স, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (বিএমটি) শিক্ষাক্রমে প্রায় ৪,০০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে।
আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি ডাঃ আলতাফ হোসেন, মাষ্টার ওলিয়ার রহমান, মাষ্টার আব্দুল হামিদ, মাষ্টার মসলেম উদ্দীন, অধ্যক্ষ কাজী আব্দুল হালিম, অধ্যক্ষ পরিতোষ কুমার ঘোষ, উপাধ্যক্ষ আফছার আলী চাকলাদার ও প্রধান সহকারী আফসার আলী বিশ্বাস এবং আরো আরো অনেকের অবদানকে যারা কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
বর্তমানে কলেজটির সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় যার অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণীয় তিনি হলেন আমাদের প্রিয় নেতা যশোর–৪ আসন থেকে বার বার নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্য বাবু রণজিৎ কুমার রায়। গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন–এর সূযোগ্য পুত্র প্রজন্ম–৭১ এর সভাপতি জনাব শাহীন রেজা নূর–কে যার বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপে কলেজটি জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়। যিনি গত ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে কানাডার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
যশোর শহরের উত্তরে অভিবাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি মাইল ফলক হিসাবে কাজ করছে। আমি স্বপ্ন দেখি সেই কলেজের, যে কলেজটি হবে সর্ব দিক দিয়ে অনুকরণীয় একটি আদর্শ কলেজ। আমি স্বপ্ন দেখি একদিন এই কলেজ থেকে সকল শিক্ষার্থী অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জ্ঞান–বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত বিদ্যায় দক্ষতা অর্জন করে দেশের সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় আগামী ২০৪১ সালের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের যোগ্য আদর্শ সৈনিক তৈরি হবে যারা আগামীতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে এবং আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় কলেজটি একদিন যশোরের বুকে একটি অনুকরণীয় আদর্শ কলেজ হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।